একদিন, গভীর জঙ্গলের বাঘ, টিকো, একটি সবুজ পাতার টুপি পরে, হাতে একটি গুপ্তধনের মানচিত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তার চোখে ছিল হারানো হাসির মণি খুঁজে বের করার স্বপ্ন। টিকোর মানচিত্রটি তার মন ভালো থাকলে একরকম পথ দেখায়, আর মন খারাপ থাকলে অন্য পথ। টিকো একসময় তার পরিচিত জঙ্গল ছেড়ে এক ঝলমলে মরুভূমিতে এসে পৌঁছাল। সেখানে ছিল এক মরুদ্যান, যেখানে সোনার মতো বালি, আর আকাশে উঠা বিরাট, ঝকঝকে একটি লতা। লতার পাশে পরে ছিল একটি ফুটবল।
আয়শা, কার্লোস এবং জুয়ান, এই তিনজন বন্ধু সেখানে খেলা করছিল। আয়শা নাচতে ভালোবাসে, কার্লোস ফুটবল খেলতে আর জুয়ান হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করে। টিকো তাদের দিকে এগিয়ে এলো।
টিকো বলল, "আরে! আমি তো জঙ্গলে ছিলাম, আর এখন মরুভূমিতে!"
আয়শা বলল, "তুমি কে? আর তোমার হাতে ওটা কী?"
টিকো হাসিমুখে উত্তর দিল, "আমি টিকো, একজন জঙ্গল পরিব্রাজক। আর এটা আমার গুপ্তধনের মানচিত্র।"

কার্লোস বলল, "গুপ্তধনের মানচিত্র? কোথায় যাবে?"
টিকো মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে বলল, "আমার মনে হয়, হাসির মণির কাছে!"
জুয়ান বলল, "চলো যাই!"
টিকো, আয়শা, কার্লোস আর জুয়ান মানচিত্র অনুসরণ করে এগিয়ে চলল। মানচিত্র তাদের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা দেখল, নানা আকারের পাথর, যেগুলো টিকো তার মজার আকারের জন্য সংগ্রহ করে। প্রত্যেক পাথরের বাঁক ছিল আলাদা।
হঠাৎ তারা সেই বিরাট ঝকঝকে লতার কাছে এসে পৌঁছাল। লতার পাতাগুলো যেন নাচতে শুরু করল। আয়শা, যে কিনা নাচতে খুব ভালোবাসে, সে তো একেবারে মুগ্ধ। লতার নাচ ছিল একটা পরীক্ষা। যারা নাচের আনন্দ সত্যি অনুভব করতে পারে, তারাই কেবল সামনে যেতে পারবে। কার্লোস প্রথমে একটু দ্বিধা বোধ করছিল, কিন্তু বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলার কথা মনে করে সেও নাচে যোগ দিল। জুয়ান, নাচের তালে তাল মিলিয়ে, তার ফুটবল খেলার কায়দা দিয়ে নাচতে চেষ্টা করল।

তাদের সম্মিলিত চেষ্টা দেখে লতাটি খুব খুশি হলো। লতাটি তাদের জন্য একটি গোপন পথ খুলে দিল। তারা দেখল, সেখানে অনেক আলো ঝলমলে গাছ, যা টিকোর পরিচিত ২৭ প্রজাতির হাসির গাছের মতো।
পথটা এবার ভাগ হয়ে গেল। এক দিকে, আয়শার জন্য নাচের ঝলমলে পথ, যেখানে সে তার নাচের জাদু দেখাবে। অন্য দিকে, কার্লোসের জন্য বন্ধুদের সাথে খেলা করার সুযোগ, যেখানে সে তার ফুটবল খেলার কৌশল কাজে লাগাবে। আর জুয়ানের জন্য হাসির পথ, যেখানে সে তার মজার কায়দা দেখাবে।
আয়শা, কার্লোস এবং জুয়ান তাদের দক্ষতা দিয়ে একে অপরের সাথে সহযোগিতা করে এগিয়ে চলল। তারা একে অপরের প্রতি দয়ালু ছিল, তাই সবাই সফল হল।
সবাই যখন গুহার শেষে পৌঁছাল, তখন তারা দেখল হাসির মণি, যা উষ্ণতা আর আনন্দ ছড়াচ্ছিল। কিন্তু মণির কাছে যাওয়ার পথে ছিল একটা ধাঁধা। ধাঁধাটা মেলাতে দরকার ছিল আয়শার সৃজনশীলতা, কার্লোসের দলগত মনোভাব, আর জুয়ানের দ্রুত বুদ্ধি।
আয়শা তার নাচের ছন্দে ধাঁধাটা সাজাল, কার্লোস তার বন্ধুদের কথা ভেবে উত্তর খুঁজে বের করল, আর জুয়ান হাসতে হাসতে সঠিক সমাধান বাতলে দিল।
ধাঁধা মিলতেই মণি তাদের বন্ধু, পরিবার, এবং অন্যদের সাহায্য করার আনন্দ দেখাল। টিকো বুঝতে পারল আসল ধন হলো হাসি আর বন্ধুত্বের আনন্দ। তারা ঠিক করল, তারা সবাই আবার তাদের পুরনো জগতে ফিরে যাবে, তাদের মন ভরে ছিল উষ্ণতা আর আনন্দে। তারা সিদ্ধান্ত নিল, এই মরুদ্যানের কথা তারা গোপন রাখবে, যাতে এটি সবসময় বিশেষ হয়ে থাকে।