একসময়, অনেক উঁচুতে, মেঘের উপরে ছিল এক জগৎ, যেখানে ছিল ভেসে বেড়ানো দ্বীপমালা। আর এই দ্বীপগুলোর মাঝে সবচেয়ে সুন্দর ছিল “টুইঙ্কেল ক্যাসেল”, যা ছিল ডগার নীল রঙের, জাদুকরী এক প্রাসাদ। এর ১৪৩টি ঘর প্রতিদিন তাদের স্থান পরিবর্তন করত, আর টাওয়ারগুলো রাতে ঘুমপাড়ানি গান গাইত। প্রাসাদের চারপাশের পরিখাটিতে জল নয়, ছিল তরল তারা-আলো।
Anya, যে রূপকথার গল্প ভালোবাসে আর ধাঁধা সমাধান করতে ওস্তাদ, আর Louis, যে রাজা-রানিদের গল্প শুনতে পছন্দ করে, তারা রোজ সকালে একটি ধাঁধা দিয়ে তাদের দিন শুরু করত।
একদিন, যখন সূর্যের আলো ঝলমলে ছিল, আর পাখির দল গান গাইছিল, হঠাৎ করে একটি টাওয়ারের গান বন্ধ হয়ে গেল! Anya বলল, “আশ্চর্য! কেন টাওয়ারটি আর গাইছে না?”
Louis বলল, “মনে হচ্ছে যেন কোনো রহস্য!”
তারা দু’জনই ক্যাসেলের দিকে ছুটে গেল, তাদের কৌতূহল তাদের পথ দেখাচ্ছিল। টুইঙ্কেল ক্যাসেল তাদের স্বাগত জানালো, কিন্তু টাওয়ারের নীরবতা যেন তাদের মন খারাপ করে দিল।
“তাহলে চলো, আমরা এর কারণ খুঁজে বের করি!” Anya বলল।

তারা প্রাসাদের ভেতরে গেল। সেখানে তারা এক বিশাল, সাদা মেঘের ড্রাগনকে দেখল, যার চোখে জল। ড্রাগনটি বলল, “আমার নাম মেঘদূত। টাওয়ারের গান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে, আমার চোখের জল ঝরছে। তারা-আলোও ধীরে ধীরে নিভে যাচ্ছে।”
“কেন? কি হয়েছে?” Louis জানতে চাইল।
মেঘদূত বলল, “ক্যাসেলের কোনো এক গোপন স্থানে কেউ একজন টাওয়ারের গান চুরি করেছে।”
Anya বলল, “তাহলে তো এটা একটা দারুণ রহস্য! চলো, আমরা এর সমাধান করি।”
তারা সবাই মিলে, রহস্য সমাধানের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগল।
প্রথমেই, Anya তার ধাঁধার জ্ঞান ব্যবহার করে টাওয়ারের নীরবতার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করল। সে প্রাসাদের গোপন লাইব্রেরিতে গেল, যেখানে পুরনো সব বই রাখা ছিল। Louis, রাজার গল্প ভালোবাসে, তাই সে রাজার রাজ্যের পুরনো ইতিহাস ঘেঁটে দেখল, যেখানে হয়তো কোনো সূত্র লুকানো আছে।
Anya একটি পুরনো বই খুঁজে বের করল, যেখানে ক্যাসেলের জাদু সম্পর্কে লেখা ছিল। সেই বইটিতে একটি গোপন মন্ত্র ছিল, যা টাওয়ারের গান ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে।

এদিকে, Louis পুরনো নথিপত্র ঘেঁটে জানতে পারল যে, একসময় ক্যাসেলের আশেপাশে এক লোভী প্রাণী বাস করত, যে সব সুন্দর জিনিস চুরি করতে ভালোবাসত। “হয়তো সেই প্রাণীই গান চুরি করেছে,” Louis বলল।
“তাহলে, আমাদের সেই লোভী প্রাণীটিকে খুঁজে বের করতে হবে,” Anya বলল।
তারা দু’জনে মিলে মেঘদূতের সাথে কথা বলল। মেঘদূত তাদের প্রাসাদের গোপন কুঠুরীর দিকে নিয়ে গেল। সেখানে তারা দেখল, সেই লোভী প্রাণীটি টাওয়ারের গান চুরি করে লুকিয়ে রেখেছে।
Anya সাহস করে প্রাণীটির সাথে কথা বলল। সে বলল, “গানটি ফিরিয়ে দাও। এটা আমাদের সবার ভালো লাগে।”
Louis ইতিহাসের গল্প শোনালো, যেখানে দেখা যায় লোভের কারণে কিভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে।
প্রথমে প্রাণীটি রাজি হলো না, কিন্তু Anya আর Louis-এর কথা শুনে তার মন নরম হলো। অবশেষে, সে গানটি ফিরিয়ে দিতে রাজি হলো।
Anya সেই গোপন মন্ত্রটি উচ্চারণ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে টাওয়ার আবার গান গাওয়া শুরু করল। তারা-আলো ঝলমল করে উঠল, আর মেঘদূতের চোখে আনন্দের অশ্রু দেখা দিল, যা পরে সুন্দর হিরের টুকরোর মতো হয়ে গেল।
Anya আর Louis, তাদের বন্ধু মেঘদূতকে সঙ্গে নিয়ে, ক্যাসেলের সব টাওয়ারে গিয়ে গান শুনল। তারা বুঝতে পারল, একসঙ্গে কাজ করলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আর এভাবেই, টুইঙ্কেল ক্যাসেল আবার তার আগের মতো সুন্দর হয়ে উঠল, যেখানে গান ছিল, তারা-আলো ছিল, আর বন্ধুত্বের বাঁধন ছিল অটুট।