এক ঝলমলে মহাকাশ স্টেশনে, যেখানে তারাগুলো সবসময় মিটমিট করে জ্বলে, সেখানে ছিল রকেট পপ নামে একটি উজ্জ্বল নীল রঙের স্পেস পড। রকেট পপের স্বপ্ন ছিল নতুন নতুন গ্যালাক্সি ঘুরে দেখা। তার ভিতরে থাকত রংধনু, যা সে বিভিন্ন গ্রহ থেকে সংগ্রহ করত। রকেট পপ যখন খুশি হত, তখন তার শরীর গোলাপী হয়ে যেত!
একদিন, রকেট পপ তার বন্ধু নুনির সাথে দেখা করল। নুনি ছিল একটা ছোট্ট, তিন চোখের মহাকাশচারী, যার লাইম সবুজ শরীর ছিল। নুনি সবসময় একটা বাবল সসারে চড়ে ঘোরে এবং হাসলে তার মুখ থেকে ঝিকমিক করে তারা বের হয়। নুনি পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ খুব ভালোবাসে। নুনি বলল, "আয়, রকেট পপ! আজ আমরা একটা দারুণ অভিযানে যাবো!" রকেট পপ আনন্দে লাফিয়ে উঠল, "কোথায়? কোথায়?"
মহাকাশ স্টেশনের অন্য প্রান্তে, ছোট্ট আজাল তার ঝলমলে মুকুটটি খুঁজছিল। সে তার ব্যাগটা নিয়ে খেলছিল, আর তার পাশে রাখা ছিল এক ঝাঁক সুন্দর মাছের ছবি। আজালের প্রিয় জিনিসগুলোর মধ্যে ছিল কুকুরছানা, মুকুট, ব্যাগ, জুতো এবং মাছ।
অন্যদিকে, পিং নামে একটি শান্ত মেয়ে, চুপ করে বসে স্বপ্ন-গল্প শুনছিল। তার খুব শান্ত থাকতে ভালো লাগে, আর সে প্রকৃতির শব্দ শুনতে ভালোবাসে। পিং-এর মোটেও আওয়াজ ভালো লাগে না।

হঠাৎ, রকেট পপ দেখল, তার স্টোরেজ কম্পার্টমেন্টের একটা জরুরি জিনিস নেই—স্পার্কলি স্পেস কী! “আরে, আমার নক্ষত্রের চাবিটা কোথায় গেল?” রকেট পপ বলল। নুনি বলল, “চিন্তা কোরো না, বন্ধু! আমি সাহায্য করব।”
রকেট পপ আর নুনি তাদের যাত্রা শুরু করল। রকেট পপ খুব দ্রুত ছুটতে পারে, আর নুনি তার বাবল সসার দিয়ে সব কিছু দেখতে পারছিল। তারা প্রথমে গেল ঝিকমিক ছায়াপথে। সেখানে তারা দেখল নানা রঙের গ্রহ, যাদের মধ্যে কিছু ছিল সবুজ, কিছু নীল, আবার কিছু সোনালী। রকেট পপ যখন সবুজ গ্রহে গেল, তখন তার শরীর সবুজ হয়ে গেল।
নুনির কাছে কিছু পৃথিবীর পাথর ছিল, যা সে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছিল। নুনি সেই পাথরগুলো ব্যবহার করে চাবিটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিল। নুনি তার তৃতীয় চোখ দিয়ে অদৃশ্য রংধনুর ঢেউ দেখতে পারতো, তাই সে সহজেই বুঝতে পারছিল চাবিটা কোথায় আছে।
আজাল আর পিং-ও তাদের সাথে যোগ দিল। আজাল বলল, “আমিও যাব! আমার জুতো চাই!” পিং শান্ত গলায় বলল, “আমিও সাহায্য করব।”
তারা একটা রহস্যময় এলাকার দিকে গেল। সেখানে অনেক অদ্ভুত জিনিস ছিল। হঠাৎ, রকেট পপের স্টোরেজ কম্পার্টমেন্ট খুলে গেল। তার ভিতর থেকে অনেক রংধনু বেরিয়ে এলো। নুনি তার বাবল সসার দিয়ে সব কিছু পরীক্ষা করতে লাগল। সে বলল, “মনে হচ্ছে, চাবিটা একটা গোপন পথে লুকিয়ে আছে।”

তারা একটা গোপন পথ খুঁজে পেল। পথের ধারে ছিল কিছু সুন্দর মাছ। তারা পথটা ধরে এগিয়ে চলল। হঠাৎ, তারা দেখল, একটা বিশাল দরজা, যার উপরে একটা তারা আঁকা। নুনি বলল, “এই দরজাই সম্ভবত স্বপ্ন-দুনিয়ার দরজা! আর চাবিটা নিশ্চয়ই এর কাছেই আছে।”
রকেট পপ, নুনি, আজাল আর পিং একসঙ্গে কাজ করতে শুরু করল। আজাল বলল, “আমি আমার মুকুটটা দিয়ে আলো জ্বালাব!” পিং চুপ করে তাদের সাহায্য করতে লাগল। রকেট পপ খুব দ্রুত চারদিকে উড়তে লাগল, নুনি তার বাবল সসার দিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে লাগল, আর আজাল তার ঝলমলে মুকুট দিয়ে পথ দেখাচ্ছিল।
অবশেষে, তারা চাবিটা খুঁজে পেল! সেটি ছিল একটা ছোট, সোনার তারা আকারের চাবি, যা ঝিকমিক করছিল। রকেট পপ চাবিটা হাতে নিয়ে দরজার কাছে গেল। সে চাবিটা লাগাতেই দরজাটা খুলে গেল! তারা সবাই একসঙ্গে স্বপ্ন-দুনিয়ায় প্রবেশ করল।
স্বপ্ন-দুনিয়ায় ছিল নানা রঙের জুতো—লাল, নীল, সবুজ, হলুদ! আজাল আনন্দে চিৎকার করে উঠল, “ওয়াও! এত সুন্দর জুতো!” পিং শান্তভাবে হাসল। রকেট পপ আর নুনি একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসল।
তখন নুনি বলল, “দেখলে তো, বন্ধুরা? একসঙ্গে কাজ করলে, কোনো কিছুই অসম্ভব নয়!” রকেট পপ, নুনি, আজাল আর পিং—সবাই মিলে হাসতে লাগল। তারা বুঝতে পারল, বন্ধুত্বের চেয়ে বড় কোনো শক্তি নেই।