একসময়, একটি গোপন বাগান ছিল, যেখানে সবচেয়ে অসাধারণ জিনিসগুলি লুকিয়ে ছিল। এই বাগানে ছিল এক জঙ্গলের বাঘ, তার নাম ছিল টিকো। টিকো সব সময় সবুজ পাতার টুপি পরে থাকত, আর তার কাছে ছিল একটি গুপ্তধনের মানচিত্র। টিকোর স্বপ্ন ছিল হারানো হাসির রত্ন খুঁজে বের করা। এই রত্নটি নাকি সবার মুখে হাসি ফোটাতো।
টিকোর বিশেষ ক্ষমতা ছিল লতাগুল্মের সাথে কথা বলার, আর তারা তাকে গাছ থেকে গাছে দোল খেতে সাহায্য করত। সে মজার আকারের পাথর জমা করত। সে হাসিখুশি গাছেরও সন্ধান করেছে, প্রায় সাতাশটির মতো নতুন প্রজাতি! টিকোর মানচিত্রটি তার মুড অনুযায়ী দিক পরিবর্তন করত।
এই বাগানে আরও ছিল একজন, যার নাম ছিল ক্লোভার। সে ছিল একটা বন-অঙ্কুর, যে হাসিখুশি ছিল, যখন সূর্যের আলো তার পাতায় এসে লাগত। ক্লোভার সব গাছের সাথে কথা বলতে পারত। সে যখন খুশি হত, তখন প্রাকৃতিক সুগন্ধী তৈরি করত। তার মাথার উপরে প্রতিদিন একটি নতুন ফুল জন্মাতো, আর তার পাতাগুলো অন্ধকারে জ্বলজ্বল করত।

আর ছিল কিকি, একটি ক্যান্ডি কর্ন ইউনিকর্ন। সে সবসময় কটন ক্যান্ডি মেঘের মধ্যে দৌড়াতো আর বন্ধুদের সাথে খাবার ভাগ করে নিত। কিকির শিং যেকোনো জিনিসকে এক ঘন্টার জন্য ক্যান্ডিতে পরিণত করতে পারত। সে যখন দৌড়ে যেত, তখন তার পেছন পেছন ছিটিয়ে যেত নানান রঙের স্প্রিংকলস, আর তার কেশরগুলি বিভিন্ন স্বাদের কটন ক্যান্ডির মতো ছিল।
একদিন, টিকো, ক্লোভার আর কিকি, হাসির রত্নের খোঁজে যাত্রা শুরু করল। টিকো তার মানচিত্রটি খুলল। মানচিত্রটি প্রথমে তাদের নিয়ে গেল একটি ঝর্ণার কাছে, যেখানে তারা একটি ধাঁধা সমাধান করল। তারপর তারা গেল একটা গভীর জঙ্গলে। টিকো লতাগুল্ম ধরে ঝুলে পথ তৈরি করল, ক্লোভার তার সুগন্ধী ছড়িয়ে পথের বাধা দূর করল, আর কিকি তার শিং দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ক্যান্ডি তৈরি করে দিল।
মানচিত্র তাদের নিয়ে গেল একটি উইসপারিং জলপ্রপাতের কাছে। সেখানে তাদের একটি ধাঁধা সমাধান করতে হয়েছিল। ধাঁধাটি ছিল, “আমি সবসময় কথা বলি, কিন্তু আমার কোনো কন্ঠস্বর নেই। আমি কী?” টিকো, ক্লোভার আর কিকি কিছুক্ষণ চিন্তা করল। তারপর ক্লোভার বলল, “নিশ্চয়ই জলপ্রপাত!” তারা ধাঁধার উত্তর দিল, আর জলপ্রপাতের দরজা তাদের জন্য খুলে গেল।
টিকোর মন ভালো থাকলে মানচিত্র সোজা পথ দেখাতো, আর খারাপ থাকলে, পথ ঘুরিয়ে দিত। একবার তারা একটা অদ্ভুত পথে গেল, যেখানে সবকিছু উল্টো ছিল! ভাগ্যিস, কিকির শিং ছিল, সে তার জাদু দিয়ে পথ সোজা করে দিল।

তখন সন্ধ্যা নামছিল। আকাশে চাঁদ ধীরে ধীরে উঠছিল। নিশার মা তাকে রাতে সুন্দর ঘুম পাড়ানি গান শোনাতেন। গভীর রাতে, নিশা চাঁদ দেখতে বারান্দায় যেত। টিকো, ক্লোভার আর কিকি একটি মিষ্টি ঘুম পাড়ানি গানের শব্দ শুনতে পেলেন, যা তাদের আরও গভীরে যেতে উৎসাহিত করল। গানের সুর অনুসরণ করে, তারা এক অন্ধকার গুহার সামনে এসে পৌঁছাল। নুহের exploration-এর খুব শখ। টিকো সাহস করে বলল, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই! আমরা একসাথে আছি।” ক্লোভার তার পাতা থেকে আলো ছড়াতে শুরু করল, আর কিকি তার শিং দিয়ে গুহার ভেতরের অন্ধকার দূর করতে লাগল।
গুহার ভেতরে ছিল একটি গোলকধাঁধা। গোলকধাঁধার মাঝে ছিল হাসির রত্ন। টিকো, ক্লোভার আর কিকি গোলকধাঁধার ভেতরে প্রবেশ করল। গোলকধাঁধাটি ছিল কঠিন, কিন্তু টিকো ছিল খুব সাহসী। ক্লোভার তার সুগন্ধী দিয়ে পথ তৈরি করল, আর কিকি তার শিং দিয়ে ক্যান্ডি তৈরি করে, গোলকধাঁধার বাধাগুলো ভাঙতে লাগল। তারা একে অপরের সাহায্য করছিল।
টিকো, ক্লোভার আর কিকি গোলকধাঁধার শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছাল। সেখানে তারা দেখল, একটি ছোট বাক্সে হাসির রত্নটি রাখা আছে। টিকো বাক্সটি খুলল। কিন্তু সেখানে কোনো রত্ন ছিল না! সেখানে ছিল একটি চিরকুট। চিরকুটে লেখা ছিল, “হাসি কোনো রত্নে নেই, হাসি আছে বন্ধুত্বের মাঝে!”
তখন তাদের মনে হলো, তারা রত্ন খুঁজে না পেলেও, তারা বন্ধুত্বের আসল স্বাদ খুঁজে পেয়েছে। তারা বুঝতে পারল, একসঙ্গে পথ চলাই সবচেয়ে আনন্দের। তারা গোলকধাঁধা থেকে বেরিয়ে এল। তারা হাসতে হাসতে বাগানে ফিরে এল।
আকাশে চাঁদ আর তারা জ্বলজ্বল করছিল। লুনা, তার মায়ের কোলে বসে, আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসছিল। টিকো, ক্লোভার আর কিকি আবার তাদের বন্ধুদের সাথে মিলিত হলো। তারা ঠিক করল, তারা একসঙ্গে আরও অনেক অভিযান করবে। কারণ, বন্ধু থাকলে কঠিন পথও সহজ হয়ে যায়!