একদিন, অনেক দূরে, মহাকাশে, একটি অদ্ভুত জায়গা ছিল—ন্যাপল্যান্ড। এখানে ছিল একটি বিশেষ স্পেস স্টেশন, যেখানে সবাই ঘুমাতে ভালোবাসত। আর এই রাজ্যের রাণী ছিলেন কুইন স্নুজল। রাণী স্নুজলের পরনে ছিল কমলা রঙের একটি কম্বল-চাদর, আর হাতে ছিল স্বপ্নের ধুলোর একটি রাজদণ্ড। এই ধুলো ছিটিয়ে দিলে সবাই গভীর ঘুমে বিভোর হয়ে যেত।
একদিন, ওলিভিয়া নামের একটি ছোট্ট মেয়ে, যে ইউনিকর্ন আঁকতে খুব ভালোবাসে, সে স্বপ্নে দেখল ন্যাপল্যান্ডের কথা। সে দেখল, আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে নরম তুলোর মতো মেঘ, আর তার উপর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে রংধনুর মতো আলো। অন্যদিকে, আন্দ্রেস, যে ফুটবল খেলতে খুব ভালোবাসে, সে কিছুতেই চুপ করে থাকতে পারছিল না। তার খুব অস্থির লাগছিল।

হঠাৎ, ন্যাপল্যান্ডে একটা বিপদ ঘটল। স্বপ্নের ধুলো ফুরিয়ে আসছিল! সবাই ঘুমোতে পারছিল না, আর রাজ্যের শান্তি যেন ভেঙে যাচ্ছিল। কুইন স্নুজল, যিনি একশো বছর ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন, ঘুম থেকে উঠেই বুঝতে পারলেন, কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। তিনি তাঁর রাজদণ্ড হাতে নিলেন, আর রওনা দিলেন স্বপ্নের ধুলোর উৎস খুঁজে বের করতে।
কুইন স্নুজলের সঙ্গে যোগ দিল একদল মহাকাশের কাঠবিড়ালী। তাদের সবার পরনে ছিল ছোট ছোট স্পেসস্যুট, আর তারা সবসময় প্রস্তুত থাকত। তাদের মহাকাশযানটি ছিল বিশাল এক কমলা রঙের ফুটবল! যাত্রা শুরু হলো, আর ওলিভিয়া তার স্বপ্নে দেখা ইউনিকর্নের ছবি আঁকতে লাগল, যেন সে নিজেও তাদের সঙ্গে যাচ্ছে।
তারা চলল, চলল... তারা গেল ঝলমলে গ্রহাণু ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে। সেখানে তারা অনেক মহাকাশ পাথরের সাথে ধাক্কা খেল, কিন্তু কাঠবিড়ালীর দল তাদের ফুটবল খেলার দক্ষতা দিয়ে যানটিকে নিরাপদে নিয়ে গেল। পথে তাদের সাথে দেখা হলো একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ধূমকেতুর, যে কিনা আলোর গতিতে ছুটে চলেছিল। ধূমকেতু তাদের পথ দেখাল, আর ওলিভিয়া তার আঁকা ছবিতে ধূমকেতুর পথটাকে রংধনুর মতো করে দেখাল।

কুইন স্নুজল তার রাজদণ্ড দিয়ে সব বিপদ থেকে তাদের বাঁচাচ্ছিলেন। তিনি বলতেন, “কষ্ট হলেও, সবসময় পথ থাকে!” অবশেষে, তারা পৌঁছাল স্বপ্নের ধুলোর উৎস, ঘুমন্ত চাঁদে। কিন্তু সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক ভয়ঙ্কর স্পেস ক্রাকেন!
ক্রাকেনটা বিশাল, ভয়ানক দেখতে, আর তার অনেকগুলো হাত। সে তাদের পথ আটকাতে চাইল। কিন্তু ওলিভিয়ার ইউনিকর্নের ছবি আর আন্দ্রেসের ফুটবল খেলার বুদ্ধি কাজে লাগল। কাঠবিড়ালীর দল তাদের ফুটবল দক্ষতা দেখালো, আর ধূমকেতুর আলোর পথ ব্যবহার করে তারা ক্রাকেনকে বোকা বানাল। ক্রাকেন পালিয়ে গেল, আর কুইন স্নুজল স্বপ্নের ধুলো সংগ্রহ করলেন।
কুইন স্নুজল ফিরে এলেন ন্যাপল্যান্ডে। তিনি ধুলো ছিটিয়ে দিলেন, আর সঙ্গে সঙ্গে সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন হলো। ওলিভিয়া দেখল ইউনিকর্নের ফুটবল খেলা, আর আন্দ্রেস দেখল, সে তার ফুটবল নিয়ে মহাকাশে উড়ছে। সবাই শান্তিতে ঘুমোচ্ছে, আর ন্যাপল্যান্ড আবার তার আগের রূপে ফিরে এল।