অনেক দিন আগের কথা, একটি দূর গ্রহের প্রাচীন ধ্বংসাবশেষে ডেভিড, গ্রেস এবং ভিক্টর নামে তিনজন তরুণ মহাকাশচারীর একটি দল তাদের স্কুলের ভ্রমণে এসেছিল। ধ্বংসাবশেষের বাইরে ছিল বিশাল পাথরের স্তম্ভ, যা সূর্যের আলোতে ঝলমল করছিল। ডেভিড, যে ফুটবল খেলতে ভালোবাসে, সে সবসময় নতুন কিছু খুঁজে পাওয়ার জন্য আগ্রহী ছিল। গ্রেস, যে অন্যদের সাহায্য করতে ভালোবাসে, সে শান্তভাবে চারপাশ দেখছিল। আর ভিক্টর, যে সুপারহিরোদের গল্প শুনতে ভালোবাসে, সে তার দলের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত ছিল।
তারা যখন ধ্বংসাবশেষের কাছে পৌঁছাল, তখন তাদের শিক্ষক তাদের সাবধান করে বললেন, “এখানে খুব সাবধানে থেকো, কারণ এই ধ্বংসাবশেষের ভেতরে অনেক বিপদ লুকিয়ে থাকতে পারে।”
ডেভিড, গ্রেস এবং ভিক্টর একসঙ্গে হেঁটে একটি লুকানো প্রবেশপথ খুঁজে পেল। প্রবেশপথের ভেতরে, তারা অদ্ভুত কিছু প্রতীক এবং উজ্জ্বল গাছপালা দেখতে পেল। গাছপালাগুলো এমন আলো দিচ্ছিল যেন তারা তাদের দিকে হাসছে।
হঠাৎ, তারা একটি ছোট্ট লাল রঙের রোবট দেখতে পেল। রোবটটির অ্যান্টেনা ছিল, আর সে অদ্ভুত শব্দ করে কথা বলছিল – “বীপ...বুপ...বীপ!”
ডেভিড বলল, “আশ্চর্য! রোবটটি কী বলছে?”
গ্রেস বলল, “মনে হচ্ছে, সে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে।”

ভিক্টর এগিয়ে এসে বলল, “আমি বুঝি, সম্ভবত সে আমাদের সাহায্য করতে চায়।”
তখন, তাদের কাছে একটি ছোট, লাল রঙের, ছোট্ট চাঁদ থেকে আসা রোবট এগিয়ে এলো, যার নাম ছিল 'বুপ'। বুপ তাদের বলল, “বীপ...আমি বুপ। আমি তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বীপ...তোমাদের কাছে লুকানো 'নক্ষত্রের আলো' খুঁজে বের করতে হবে।” বুপ তাদের কথা বোঝানোর জন্য তার অ্যান্টেনা দিয়ে তাদের স্বপ্নের কথা শোনাতে শুরু করল। ডেভিড দেখল তার প্রিয় ফুটবল খেলার স্মৃতি, যেখানে সে গোল করে জিতেছিল। গ্রেস দেখল এক ঝলমলে রামধনুর মতো আলো, যা ছিল এক ধরনের ভালোবাসার প্রতীক। ভিক্টর দেখল তার প্রিয় সুপারহিরোদের বীরত্বের গল্প।
বুপ তাদের বলল, “ধ্বংসাবশেষের গভীরে একটি গুপ্তধন আছে – 'নক্ষত্রের আলো'। এটি এমন একটি জিনিস যা সকলের মধ্যে ভালো ব্যবহার এবং ভালোবাসার জন্ম দেয়।”
বুপের কথা শুনে ডেভিডের মনে হলো, যেন সে তার বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করছে। গ্রেসের মনে হলো, যেন সে একটি সুন্দর বাগান দেখছে, যেখানে সবাই হাসিখুশি। আর ভিক্টরের মনে হলো, সে যেন কোনো সুপারহিরো, যে খারাপ লোকদের পরাজিত করছে।
বুপ তাদের ধ্বংসাবশেষের গভীরের দিকে নিয়ে গেল। তারা যখন যাচ্ছিল, তখন তারা একটি উজ্জ্বল সবুজ রঙের এলিয়েন-এর সাথে দেখা করলো। এলিয়েনটির নাম ছিল নানি, এবং তার হাতে ছিল পিনাট বাটারের স্যান্ডউইচ। নানি তার বাবল সসারে চড়ে ঘুরছিল, কিন্তু তার সসারটি একটি পাথরের সাথে আটকে গিয়েছিল।
নানি বলল, “গিগল...আমার বাবল সসার আটকে গেছে। গিগল...তোমরা কি আমাকে সাহায্য করতে পারবে?”
বুপ বলল, “বীপ...নানি, সাহায্য করতে পারে।”

তখন তারা দেখল, নানি তার বাবল সসারের চারপাশে থাকা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু তার সেই ক্ষমতা কাজে লাগানোর জন্য, তাদের একটি জটিল ধাঁধা সমাধান করতে হত। ধাঁধাটির মধ্যে ছিল প্রাচীন প্রযুক্তি এবং নানির ক্ষমতা ব্যবহারের কৌশল।
ডেভিড, গ্রেস এবং ভিক্টর বুপের সাহায্যে ধাঁধাটি সমাধান করতে শুরু করল। ডেভিড তার ফুটবল খেলার কৌশল মনে করে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিল। গ্রেস তার কোমলতা দিয়ে সাহায্য করল। ভিক্টর তার সাহস নিয়ে এগিয়ে এল।
ধাঁধা সমাধান করার সময়, গ্রেস কিছুক্ষণ তার কল্পনার জগতে হারিয়ে গেল। সে দেখল একটি ছোট্ট খরগোশ, অন্য একটি প্রাণীকে সাহায্য করছে।
অবশেষে, তারা ধাঁধাটি সমাধান করতে সক্ষম হলো। নানির বাবল সসারটি পাথর থেকে মুক্তি পেল। নানি বলল, “গিগল...তোমাদের ধন্যবাদ! গিগল...আমি এবার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পরিবর্তন করে তোমাদের পালাতে সাহায্য করব।”
তারা ধ্বংসাবশেষের কেন্দ্রে পৌঁছাল, যেখানে 'নক্ষত্রের আলো' ছিল। সেটি দেখতে একটি উজ্জ্বল পাথরের মতো ছিল। বুপ তাদের বলল, “বীপ... 'নক্ষত্রের আলো' কোনো গুপ্তধন নয়, বরং এটি এমন এক আলো যা ভালো ব্যবহার এবং ভালোবাসার মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়।”
তারা নানির বাবল সসার মেরামত করতে 'নক্ষত্রের আলো' ব্যবহার করল। এরপর নানি তার মাধ্যাকর্ষণ পরিবর্তন করার ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তাদের মহাকাশযানে ফিরে যেতে সাহায্য করলো।
মহাকাশযানে ফিরে আসার পর, তারা বুঝতে পারল, আসল গুপ্তধন হলো বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার শক্তি। তারা সিদ্ধান্ত নিল, এই 'নক্ষত্রের আলোর' রহস্য সবার সাথে ভাগ করে নেবে। তারা তাদের বন্ধুদের এবং পরিবারের সদস্যদের ভালো ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করবে।
এরপর, তারা তাদের মহাকাশযানে ফিরে গেল, নতুন দিনের জন্য প্রস্তুত হয়ে। তাদের মনে ছিল আনন্দ, কারণ তারা জানতে পেরেছিল, ভালো ব্যবহার এবং ভালোবাসাই হলো সবচেয়ে বড় শক্তি।