একদিন, মারিয়া নামের একটি মেয়ে, যে গান ভালোবাসে, সে তার পরিবারের সাথে ভেসে বেড়ানো দ্বীপগুলোতে বেড়াতে গিয়েছিল। দ্বীপগুলো আকাশে ভেসে বেড়াত, যেন তারা তারার মাঝে খেলা করে। মারিয়ার সাথে ছিল তার পরিবারের বিশেষ বন্ধু, ব্লিংকি, একটি বেগুনি রঙের, কথা বলতে পারা, জাদুকরী ব্যাকপ্যাক। ব্লিংকির ভিতরে ছিল এক বিশাল জগৎ, যেখানে সবকিছু রাখা যেত। ব্লিংকি সবসময় মারিয়ার জন্য মজার মজার কথা বলত।
মারিয়ার চোখে পড়ল একটি নীল রঙের, উড়ন্ত ডোনাট, যার নাম ছিল ডিযি। ডিযি সবসময় ঘুরপাক খেতে ভালোবাসত আর হাসিখুশি থাকত। তার চারপাশে রঙিন কনফেত্তি উড়ত। আর ছিল নানি নামের একটি ছোট্ট, সবুজ রঙের এলিয়েন। নানির তিনটি চোখ ছিল, আর সে সবসময় বাদাম মাখনের স্যান্ডউইচ খেত। নানি তার বাবল সসার-এ চড়ে আকাশে ঘুরে বেড়াত, আর বুদবুদ তৈরি করত, যেগুলি আকাশে ঝলমল করত।
একদিন, যখন মারিয়া তার পরিবারের সাথে বসে ছিল, ব্লিংকি হঠাৎ একটি অদ্ভুত সংকেত পেল। সংকেতটি আসছিল আকাশ-বাগান থেকে। আকাশ-বাগান ছিল সেই দ্বীপগুলির একটি বিশেষ অংশ, যেখানে সুন্দর সুন্দর গান বাজত। এই গানগুলির কারণেই দ্বীপগুলি আকাশে ভেসে থাকতে পারত। ব্লিংকি বলল, "মনে হচ্ছে, আকাশ-বাগানে কিছু একটা গোলমাল হচ্ছে! চল, আমরা যাই!”

মারিয়া, ব্লিংকি, ডিযি আর নানি সবাই মিলে যাত্রা শুরু করল। ডিযি তার দ্রুত গতির স্পিনের মাধ্যমে তাদের এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে নিয়ে যাচ্ছিল। নানি তার বুদবুদ তৈরি করার যন্ত্র দিয়ে পথের বাধাগুলি সরিয়ে দিচ্ছিল। ব্লিংকি তার ভেতরের জগৎ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করে দিচ্ছিল।
তারা যখন আকাশ-বাগানে পৌঁছাল, তখন দেখল সেখানকার সুরগুলি ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। ফুলগুলি তাদের উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে, আর পাখিগুলি গান গাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মারিয়া খুব মন খারাপ করে বলল, “এ কি হচ্ছে?”
তারা সবাই মিলে খুঁজতে লাগল, কেন এমন হচ্ছে। খুঁজতে খুঁজতে তারা দেখল, একটি বিশাল, কালো মেঘের মতো দেখতে প্রাণী, যা সবসময় মুখ গোমড়া করে থাকে, সে সুরগুলি শুষে নিচ্ছে। ব্লিংকি বলল, “ওহ! এ তো দেখছি সেই মেঘ-দৈত্য, যে সবসময় একা থাকতে ভালোবাসে!”
মারিয়া এগিয়ে এসে মেঘ-দৈত্যের সাথে কথা বলতে চাইল। সে বলল, “আরে মেঘ-দৈত্য, তুমি কেন এমন করছ?”

মেঘ-দৈত্য বলল, “কেউ আমার সাথে কথা বলে না, কেউ আমার জন্য গান গায় না, তাই আমার ভালো লাগে না!”
মারিয়ার মনে হলো, সে যদি গান গায়, তাহলে হয়তো মেঘ-দৈত্যের মন ভালো হয়ে যাবে। মারিয়া তার মিষ্টি গলায় গান ধরল। তার গানের সুরে আকাশ-বাগান আবার প্রাণ ফিরে পেল। ফুলেরা হাসতে শুরু করল, আর পাখিরা আবার গান গাইতে লাগল।
নানি তার বুদবুদ তৈরি করার যন্ত্র দিয়ে মেঘ-দৈত্যের জন্য বাদাম মাখনের বুদবুদ তৈরি করল। ডিযি তার চারপাশে ঘুরতে লাগল, যাতে মেঘ-দৈত্য হাসে। ব্লিংকি তার ভেতরের জগৎ থেকে রং বেরঙের খেলনা বের করে আনল।
মারিয়ার গান শুনে, নানির বুদবুদের জাদু দেখে, ডিযির হাসি আর ব্লিংকির খেলনা দেখে মেঘ-দৈত্যের মন ভালো হয়ে গেল। সে বুঝতে পারল, একা থাকার মধ্যে কোনো আনন্দ নেই। মারিয়া, ব্লিংকি, ডিযি আর নানির বন্ধুত্বের জাদুতেই আকাশ-বাগানের সুর আবার ফিরে এল, আর দ্বীপগুলি আগের মতোই আকাশে উড়তে লাগল। মারিয়া তার পরিবারকে জড়িয়ে ধরল, কারণ পরিবারের সাথে কাটানো সময় সবসময় আনন্দের হয়।